রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, দুপুর ১:৩১

তেল চুরির অপবাদে শ্রমিককে মারধর, বিকাশে টাকা নিয়ে মেলে মুক্তি

0Shares


কক্সবাজারে সমুদ্রে মাছ ধরা একটি টলারে মো. হোসেন (৫৫) নামের এক  শ্রমিককে তেল (ডিজেল) চুরির অপবাদে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রমিক হোসেনের পরিবার থেকে একাধিক মোবাইল নম্বরে  বিকাশে ৫০ হাজার  টাকা নিয়ে তাকে মুক্তি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রলার মালিক মো.সোহেল কোম্পানি নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে।


গত ২২ মার্চ কক্সবাজার জেলার নুন্নারছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী মো. হোসেন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শ্রমিক হোসেনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আফজল গ্রামে। তিনি কক্সবাজারে সোহেল কোম্পানির ট্রলারে ইঞ্জিন মিস্ত্রি হিসেবে চাকুরী করে আসছিলেন।

ভুক্তভোগী মো. হোসেন জানান, বিগত ৯ মাস আগে
কক্সবাজারের স্থানীয় নুন্নারছড়া এলাকার মৎস ব্যবসায়ী ও সমুদ্রে মাছ ধরা একাধিক ট্রলারের মালিক সোহেল কোম্পানির একটি ট্রলারের ইঞ্জিন মিস্ত্রি হিসেবে কাজ নেন তিনি।  ওই ট্রলারে ইঞ্জিন মিস্ত্রি হিসেবে  ৯ মাস কাজ করার বিপরীতে ২ লক্ষ টাকা চুক্তি হয় তার ।

চুক্তি অনুযায়ী সাড়ে সাত মাস কাজ শেষে মালিক সোহেল তাকে ১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।
এরইমধ্যে গত (২২ মার্চে) রাতে হঠাৎ ট্রলারের তেল চুরির অপবাদ দিয়ে মালিক সোহেল ও তার লোকজন মিলে রশ্মিতে বেধে তাকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি অনুযায়ী টাকা না পেলে সোহেল কোম্পানি তাকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

নিরুপায় হয়ে পূর্ব পরিচিত ও স্থানীয় খোরশকুল এলাকার এক কোম্পানির ট্রলারে ইঞ্জিন মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করার শর্তে অগ্রিম এক লক্ষ টাকা ও বাড়িতে ফোন করে  পরিবারের কাছ থেকে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে দিলে সোহেল কোম্পানি তাকে মুক্তি দেন। পরে বাড়িতে ফিরে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সোমবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এসে ঘটনাটি খুলে বলেন তিনি।

তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাড়িতে খবর পাওয়ার পর তার স্ত্রী স্বামীকে উদ্ধার করতে সুদে টাকা নিয়ে বিকাশে পাঠিয়েছেন। গেল ঈদে পরিবার ও ছেলে সন্তানের জন্য কিছুই করতে পারেননি। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তাও সম্ভব হচ্ছেনা। যে কারণে অর্ধাহার আর অনাহারে দিন কাটছে তাদের।  টাকাগুলো ফেরত পেতে সাংবাদিক সহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ট্রলারের মালিক ও অভিযুক্ত  সোহেল কোম্পানির মোবাইল ফোন নম্বরে কল করলে বিকাশে ৫০ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ট্রলার থেকে তেল চুরির সময়ে হোসেনকে হাতেনাতে আটক করেন তিনি।  পরে জিজ্ঞেসাবাধে এরআগেও একাধিকবার  চুরি করে তেল বিক্রি করার কথা স্বীকার করে সে। যে কারণে ক্ষতিপুরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি।  তবে হোসেনকে মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবির হোসেন বলেন, এবিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0Shares

শেয়ার করুন