শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রাত ৯:২৮

রামগতিতে পুলিশের নিরবতায় প্রকাশ্যে ঘুরছে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী!

51Shares

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পুলিশের নিরবতায় হত্যা চেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী প্রকাশ্যে চলাফেরা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রেফতার না হওয়া আসামীর প্রকাশ্য হুমকিতে চরম বিপাকে পড়েছেন জিল্লুর রহমান নামে এক মামলার বাদী। তবে পুলিশের দাবি, আসামী আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছেনা। অন্যদিকে বাদীর অভিযোগ, মামলার প্রধান আসামী থানা বেষ্টনীর মধ্যে এসে দেদার ঘুরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাকে দেখেও না দেখার ভান করছেন। যে কারণে পুলিশের ভুমিকা ও ন্যায়-বিচার পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাদি ও তার পরিবার।
মামলার এজাহার ও বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের চরগোসাই এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে বীমাকর্মী জিল্লুর রহমানকে একই এলাকার এনামুল হকের ছেলে মেহরাজ তার সঙ্গীদের নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনার পরেরদিন ২০২৪ সালের ১৫ই অক্টোবর অভিযুক্ত মো. মেহেরাজ, ছিদ্দিক উল্যাহ ও মদদদাতা মিজানুর রহমানকে আসামী করে রামগতি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন বাদি জিল্লুর রহমান। ওই মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামী আদালত থেকে জামিনে থাকলেও এক নম্বর আসামী আদালত থেকে জামিন না নিয়ে উলটো পুলিশের সামনে চলাফেরা করছে। কিন্তু অজানাকারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছেননা।

এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত দুই নম্বর আসামী মিজানুর রহমান চক্রান্ত করে মূল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে স্থানীয় আজাদ মেমোরিয়াল স্কুলের কোমলমতী শিক্ষার্থীদের দিয়ে কৌশলে বাদি জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ওই স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক ও এলাকায় একজন চিহিৃত মামলাবাজ বলে বাদি তার এজাহারে উল্লেখ করেন।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে আজাদ মেমোরিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক জানান, সনদ জালিয়াতি করে এমপিওভুক্তি ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ ভাগিয়ে নেন মিজানুর রহমান। সনদ জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ায় গত ৯-৯-২০২৪ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে স্কুল কলেজ ও জনবলকাঠামো সম্পর্কিত নির্দেশিকা ২০১০-(২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত)এর-১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মিজানুর রহমানের এমপিও চুড়ান্তভাবে বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ  দেন। এরপরেও স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ কতিপয় ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে স্বপদে বহাল থেকে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে বাদির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী চিঠি ইস্যুর পর মিজানুর রহমান ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ হারিয়েছেন, সেখানে প্রধান শিক্ষক তাকে স্বপদে বহাল রাখেন কিভাবে? এটার তদন্ত হওয়া দরকার বলে দাবি তার।

মামলার বাদি জিল্লুর রহমান বলনে, পূর্বশত্রæতার জেরে আসামীরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়েছে। এবিষয়ে ন্যায় বিচার পেতে আমি রামগতি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করি। কিন্তু মামলা দায়েরের পর চার মাস অতিবাহীত হলেও পুলিশ প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করছেনা। অথচ সে প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে ঘুরাফেরা করছে। অন্যদিকে অপরাপর আসামীরা মামলা তুলে নিতে আমাকে চাপপ্রয়োগ সহ গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দিচ্ছে। যে কারণে বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মেহরাজ বলনে, পূর্বশত্রুতার কারণে জিল্লুর রহমান আমাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে। এলাকায় এসে খোঁজ নিয়ে জানেন, এর বেশি কথা না বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আয়ু) এসআই মাসুদ বলনে, জিল্লুর রহমানের দায়ের করা মামলাটি তদন্তাধিন রয়েছে। এ মামলার দু’জন আসামী আদালত থেকে জামিনে আছেন। অন্য একজন আসামী পলাতক, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রামগতি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)  মো. কবির হোসনে বলেন,  মামলাটি তদন্তাধিন। তবে মামলার তদন্ত র্কমর্কতার সাথে কথা বলার অনুরোধ করনে তিনি।
চলবে….
51Shares

শেয়ার করুন