
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রকল্প খাত, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রজেক্টের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত অন্তত ৪১জন স্বাস্থ্যকর্মীর সাত মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে।
এরমধ্যে এক মেডিকেল অফিসার সহ উপজেলার ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত ২২জন (সিএইচসিপি) হেলথকেয়ার প্রোভাইডার ও আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োগকৃত ১৬জন স্বাস্থ্যকর্মী সহ মোট ৪১জন স্বাস্থ্যকর্মী এ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। কিন্ত দীর্ঘ সাত মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জানা যায়, গ্রামের দরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের সুচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কমলনগরে ২২টি ক্লিনিকের জন্য ২২জন কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়। অপরদিকে, হাসপাতালে জনবল সংকট নিরসনে মেসার্স জাকির ট্রেডার্স নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬জন আউটসোর্সিং কর্মী এবং একইভাবে উপজেলা হেলথকেয়ার, অলটারনেটিভ হেলথকেয়ার (প্রজেক্ট) থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী এ হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
কিন্তু (২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত) গত সাত মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কেউ। কবে নাগাদ এসব বেতন-ভাতাদি পেতে পারেন সে বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই ।
হাসপাতাল সূত্রে থেকে জানা গেছে, বিনামূল্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক যাত্রা শুরু করে মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ১৪ জুন। এরপর তিন দফা প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
ভুক্তভোগী কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী জানান, মেয়াদ বৃদ্ধির পর আগের বেতন-ভাতাদি সব পাওয়া গেলেও গত বছরের জুন মাস থেকে তাদের বেতন হচ্ছেনা। এরপর ঢাকায় আন্দোলনের মুখে গত বছরের ২০ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার সিএচইসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাস দেন। কিন্তু তাদের এ আশ্বাসের পরও গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকল্প খাত বা রাজস্ব কোনো খাত থেকেই তাদের বেতন-ভাতা ছাড় করা হয়নি। এতে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে চরম কষ্টে আছেন তারা ।
এদিকে, মেসার্স জাকির ট্রেডার্স নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ও এই হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত আয়া, নাইটগার্ড, বাগানমালি, অফিস সহায়ক সহ ১৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীরা সাত মাস ধরে বেতন না পেয়ে খুবই অর্থ সংকটে পড়েছেন। আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ওয়াডবয় মো. চানগাজী বলেন, ঠিকাদার গত সাতমাস ধরে বেতন দিচ্ছেননা। কিন্তু হাসপাতালে নিয়মিতভাবে ডিউটি করছেন তিনি। বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার চালাতে খুবই হিমসিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া নিজের হাতখরচ নিয়েও চরম কষ্টে দিন কাটছে তার।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ বলেন, আমি এ হাসপাতালে নতুন এসেছি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকির ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।