
কমলনগরে সাগর (২৩) নামের এক যুবককে মোবাইল ফোনে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ছাগলে শিম গাছ খাওয়ার অজুহাতে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন গংদের বিরুদ্ধে।
পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে ছাড়িয়ে আনেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান রাসেল সুষ্ঠু সমাধান করে দেয়ার আশ্বাশ দিলেও উল্টো ভুক্তভোগী সহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন। ওই মামলায় স্কুল পড়ুয়া ১২ বছরের এক শিশুকেও আসামী করা হয়েছে। এতে ওই শিশুর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভুক্তভোগী প্রশাসনের কাছে ষড়যন্ত্রমুলক এ মিথ্যা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বিকালে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের চরপাগলা গ্রামে বাদী জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী রিনা বেগম (২৮) ভুক্তভোগী মো. সাগরের মোবাইল হোয়াটসঅ্যাপে কল করে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেয়। এরপর ছাগলে শিম গাছ খেয়ে পেলার অভিযোগ তুলে পরিবারের সদস্যরাস মিলে সাগরকে বেধড়ক মারধর পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে সাগরের বাবা মনির হোসেন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাগরকে ছাড়িয়ে আনেন।
বিষয়টি চেয়ারম্যান রাসেলকে জানালে তিনি দু’পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করার আশ্বাস দেন তিনি । যে কারণে আইনি পদক্ষেপ নেননি ভুক্তভোগীর পরিবার।
কিন্তু বাদী জয়নাল আবেদীন এরইমধ্যে গোপনে, সাগর, সাগরের বাবা মনির হোসেন, ছোটভাই ১২ বছর বয়সী মো. বাবু, আত্মীয় মো. পারভেজ, বেলাল হোসেন ও মনির সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে পুলিশের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছেননা তারা। অন্যদিকে গ্রেফতার আতংকে শিশুটিও স্কুলে যেতে পারছেনা।
ভুক্তভোগী মনির হোসেন জানান, বাদী জয়নাল আবেদীনের স্যালকের সঙ্গে বিলে মাছ শিকার করাকে কেন্দ্র করে তার ছেলে সাগরের বিরোধ চলে আসছিল। এক বছর আগের এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে ঘটনার দিন বাদীর স্ত্রী রিনা বেগম সাগরকে কৌশলে তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়। পরে সকলে মিলে তাকে পিটিয়ে ও মেরে মারাত্বক আহত করে । ঘটনাটি ভিন্নভাবে সাজিয়ে উল্টো অভিযুক্তকে (বাদির পরিবার) মারধরের অভিযোগ এনে আমার শিশু সম্তান সহ পরিবারের ৬ জনকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন বাদী। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন।
স্থানীয় কয়েকজন নামপ্রকাশ নস করার শর্তে বলেন, সামান্য একটি বিষয় যা এলাকায় সমাধান করা যেত। কিন্তু বাদী জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিয়ে মামলা করেছেন। তবে ঘটনার সাথে মামলায় উল্লেখিত বিষয়ের মিল নেই বলে জানান তারা।
মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন বলেন, আসামীদের বারবার সতর্ক করার পরেও তারা তাদের ছাগল বেঁধে না রেখে আমার প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা মুল্যের শিম গাছের ক্ষতি করেছে। শিম গাছ খাওয়া অবস্থায় ছাগল ধরে নিয়ে খোয়ারে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়িতে এসে নারীদেরকে মেরে রক্তাক্ত করেছে। যে কারণে মামলা দিয়েছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. হাফিজ জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন তিনি। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, দুই নারীকে মারধরের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে।