রবিবার, ২রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সন্ধ্যা ৭:২৬

শিবপুরে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি ছাড়া শরীফ পরিবার!

0Shares

নরসিংদী সংবাদদাতা : নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রাম এখন আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত মেসবাহ উদ্দিন সরকার (মেছু)-এর চার ছেলে—মো. রুহুল আমিন সরকার, মো. আল আমিন সরকার, মো. শামিম সরকার ও মো. আমিন সরকার—এবং তাদের মা আলেয়া বেগমের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী চক্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, এই চক্রের ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। দিনের বেলায় তারা লাপাত্তা থাকলেও রাতের অন্ধকারে দলবল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানো, হুমকি দেওয়া ও মারধরের মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে মৃত দুলু সরকারের কাছ থেকে মৃত মাতাব সরকার (শরীফ সরকারের বাবা) ৮ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমি নিয়ে রুহুল গংয়ের সঙ্গে শরীফ সরকারের পরিবারের বিরোধের সূচনা হয়। এর জের ধরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রুহুল গং ও তাদের সহযোগীরা শরীফ সরকারের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং শরীফ সরকারকে নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। জমি সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আদালতের রায় শরীফ পরিবারের পক্ষে গেলেও সন্ত্রাসীরা তা অগ্রাহ্য করে। এমনকি স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে আপস মীমাংসা হলেও রুহুল গং তাতে কর্ণপাত করেনি। গায়ের জোরে তারা এখনো জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শরীফ সরকারের পরিবারের অভিযোগ, প্রবাসে থাকা তার ভাইদের সুযোগে সন্ত্রাসীরা বারবার তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সর্বশেষ ১৫ দিন আগে মহিলাদের নিয়েও হামলা চালানো হয় শরীফ পরিবারের ওপর। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ৫ আগস্ট এর হামলার ঘটনায় দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে শরীফ সরকার নরসিংদী আদালতে মামলা করেন (মামলা নং: শিবপুর সিআর ৮৮৫/২০২৪), যা বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। তবে এখনও পর্যন্ত হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর শরীফ সরকার তার পরিবার নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বিতাড়িত অবস্থায় রয়েছেন। এ বিষয়ে শিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফজাল হোসাইন বলেন, “ওই পরিবারটি ডাকাতির মামলায় জড়িত ছিল। এই ডাকাত পরিবারের সবাই বাড়ি ছাড়া। দেয়াল ভাঙচুরের একটি অভিযোগ আদালতে প্রসিকিউশনের জন্য পাঠানো হয়েছে।” স্থানীয়দের দাবি, এই সন্ত্রাসী চক্রের দৌরাত্ম্যের কারণে গোবিন্দী গ্রামের সাধারণ মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। তারা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন—দ্রুত রুহুল গংকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার জন্য।

0Shares

শেয়ার করুন