
রোকনুজ্জামান সবুজ জামালপুরঃ অসময়ে যমুনা নদীভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটছে জামালপুরের ইসলামপুর বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়া গ্রামের এলাকাবাসী। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, রাক্ষসী যমুনা ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে একটি মসজিদ,প্রায় শতাধিক একর জমি ও দেড় শতাধিক বসতঘরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে, ৮ কোটি টাকার সোলার প্যানেল,মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,চারটি মাদ্রাসা,ছয়টি মসজিদ,ফসলি জমি,বসতঘরসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। এ বিষয়ে মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালযের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন,মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাত্র কয়েক শত গজ দূরে রয়েছে নদী। আমরা এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন পার করছি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে জরুরিভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা না নিলে কয়েক দিনের মধ্যেই বিলীন হয়ে যেতে পারে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী এবং আমরা শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছি ১৮জন।প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বড় উৎকন্ঠায় দিন পার করছেন। মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালযের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাকিল আহম্মেদ জানায়,এক মাস আগেও নদী অনেক দূরে ছিল। এখন নদী ভাঙতে ভাঙতে স্কুলের কাছাকাছি চলে এসেছে। এক মাস পর আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা, প্রতিষ্ঠান যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হবে। শাকিল আহম্মেদ মতো একই কথা বলে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিশামনি ও শহীদ মিয়া। দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার খানাম বলেন,নিজেদের আমার স্কুল থেকে প্রায় কয়েকশত গজ দূরে নদীর অবস্থান। এই স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই। বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ জানান, অসময়ে নদীভাঙন আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। এখনই যদি ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা না হয় তাহলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা,ফসলি জমি ও বসতঘর নদী গ্রাস করে নেবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ আকন্দ বলেন,আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক মাস আগে যমুনা নদী ভেঙেছে। এখন কোনোমতে টিকে রয়েছি। যে অবস্থায় আবার ভাঙন শুরু হয়েছে,তাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমিসহ অসংখ্য বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। জরুরিভিত্তিতে এর একটি সমাধান চাই আমরা। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান জানান, ভাঙন কবলিত স্থানে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



