রবিবার, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সন্ধ্যা ৭:৩৪

কমলনগরে সরকারি বই বিক্রি করে পকেট ভারি মাদ্রাসা অধ্যক্ষের!

0Shares

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও প্রশ্নবাণে একপর্যায়ে বই বিক্রির বিষয়টি শুনেছেন বলে  স্বীকার করেন তিনি । এদিকে মাদ্রাসা বন্ধের দিনে সরকারি বই  ট্রাকে করে সরিয়ে নিয়ে বিক্রি করার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টা তদন্ত করে উপযুক্ত বিচার দাবি করছেন মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট একাধিকজন।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনার কিছু ফুটেজ  স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে আসে। ফুটেজে দেখা যায়, মাদ্রাসার বড় ভবনের গেইটের সামনে ট্রাক দাড়ানো। মাদ্রাসা থেকে বই এনে ট্রাকে ওঠানো হচ্ছে।
এর আগে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঈদে মিলাদুন নবী উপলক্ষে মাদ্রাসায় সরকারি ছুটি চলাকালে মাদ্রাসার পিয়ন আব্দুর রহিমকে দিয়ে ট্রাকে করে বই সরিয়ে নিয়ে বিক্রি করেন অধ্যক্ষ।

এছাড়াও অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মাও, দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে  প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা, আর্থিক অনিয়ম ও শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানির অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
তবে দিনে-দুপুরে উপজেলার খ্যাতিমান একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির ঘটনা সামনে আসায় উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ।

সরকারের দেওয়া  শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যের বই বিক্রির ঘটনায় তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।
জানা যায়, অতিরিক্ত চাহিদা দিয়ে বই এনে প্রতিষ্ঠানের স্টোর রুমে মওজুদ করে রাখেন অধ্যক্ষ মাও দেলোয়ার। পরে সুবিধাজনক সময়ে তার অনুগত মাদ্রাসার পিয়নকে দিয়ে কেজি দরে সেই বই বিক্রি করে দেন তিনি।

এদিকে দিনেদুপুরে মাদ্রাসার স্টোররুম থেকে সরকারি  বই নিয়ে এসে একটি বড় ট্রাকে বোঝাই করছেন এমন একটি ছবি যুগান্তরের হাতে এসেছে। ওই ছবিতে দেখা যায় মাদ্রাসার পিয়ন আব্দুর রহিম নিজেই সরাসরি স্টোররুম থেকে বই এনে নিছে স্তুপ করছেন। পরে বই বোঝাই ট্রাকটি চলে যেতে দেকা যায়। তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মুঠোফোনে রহিম জানান, উনি আমাকে বলেছেন বইগুলো ট্রাকে তুলে দিতে। আমি ওনার হুকুম পালন করেছি। উনিটা কে এমন প্রশ্নের জবাবে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও,দেলোয়ার হোসেন বলেন,ছুটির দিন থাকায় আমি মাদ্রাসায় ছিলামনা তবে বই বিক্রির ঘটনাটি শুনেছি। বছরের শেষ সময়ে এখনো বই মওজুদ থাকা ও স্টোর রুমের চাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রাহাত উজ জামান বলেন,  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

0Shares

শেয়ার করুন