প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ওই মাদ্রাসাছাত্রী এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে অন্ত:সত্তা ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে গ্রাম ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন প্রতারক ওই প্রেমিক। এতে ছাত্রীটি লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের অগোচরে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
কমলনগর উপজেলা চর কাদিরা ইউনিয়নের আট নং ওয়ার্ড বাদামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রেমিক মো. তানজিদ (১৮) ওই এলাকার সানু মাঝির ছেলে। বখাটে পেশায় একজন জেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের সানু মাঝির ছেলে তানজিদ তাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে তানজিদের সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। চার মাস আগে তানজিদ গোপনে বাড়িতে এসে ঘরে ঢুকে পড়ে। বাবা মা ঘরে না থাকার সুযোগে তাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহত্যাগ করে। এরপর থেকে আজ নয় কাল বিয়ে করবে বলে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় তানজিদ।
একসপ্তাহ আগে তার পেটে হঠাৎ ব্যথা শুরু হয়। এক পর্যায়ে মা এবং খালা মিলে তাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ধরা পড়ে।
পরবর্তীতে পরিবারের চাপের মুখে সবকিছু খুলে বলে ছাত্রীটি। পরে ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্টে চার মাসের অন্ত:সত্তার বিষয়টি তানজিদকে জানানো হলে সে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। বিয়ে করতে অস্বীকার করে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় তানজিদ।
ছাত্রীটি আরও জানান, তানজিদ আমাকে প্রেমের ফাঁদে পেলে সরলতার সুযোগে আমার সর্বনাশ করেছে। আমার পেটে তানজিদের চার মাসের সন্তান। এখন সে আমাকে বিয়ে না করলে অনাগত সন্তান কার পরিচয়ে পৃথিবীতে আসবে। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তানজিদ আমাকে বিয়ে না করলে মরণ ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানার পর অভিযুক্ত তানজিদের বাবা শানু মাঝি, মামা নাছির মাঝির কাছে ছুটে যান তিনি । পরে একদিনের সময় নিয়ে নাছির মাঝি তানজিদকে গোপনে এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র কোথাও পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে অভিযুক্ত তানজিদ এলাকায় নেই জানিয়ে নানা টালবাহানা করেন তারা। তানজিদ এলাকায় আসবে জানিয়ে তার মামা নাছির মাঝি বিয়ের আয়োজন করার নামে বিষয়টি কাউকে জানাতে বারণ করায় তিনি ঘটনাটি এতোদিন গোপণ রেখেছেন। এখন নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সরেজমিন গেলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ছাত্রীটি অন্ত:সত্বার ঘটনায় শানু মাঝির ছেলে তানজিদ শতভাগ জড়িত। অন্ত:স্বত্তাকে ছেলের বউ করতে শানু মাঝি রাজি থাকলেও ছেলের মামা নাছির মাঝির নিলনকশার কারণে বিয়েটা হচ্ছেনা। নাছির মাঝি তার ভাগিনাকে গোপনে সরিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
তবে ভাগিনাকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাছির মাঝি।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে এরআগে কেউ তাকে জানায়নি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।