স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জুবায়ের বিন মোহাম্মদ (১৭) নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধারের ৪২ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নৃশসংসভাবে হত্যা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। জুবায়েরকে শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণপাড়ে নিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে আসামীরা পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে নাটক সাজায়। হত্যাকান্ডের ৪২ দিন পর রূপগঞ্জ থানায় নিহতের মা মোসাঃ মিনারা বেগম বাদী হয়ে চারজনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার রাতে নিহতের বন্ধু শাহীন, রাব্বি, সিয়াম ও আক্তার হোসেনকে আসামী করে মামলটি দায়ের করা হয়। শনিবার বিকেলে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী। এর আগে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের গাবতলা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শিক্ষার্থী জুবায়েরের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত জুবায়ের উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের চারিতালুক এলাকার মো. তপন মিয়ার ছেলে। মামলার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল বিকেলে একই এলাকার প্রবাসী নাঈমের ছেলে শাহীন (২০) জুবায়ের বিন মোহাম্মদকে বাড়ি থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। পরে গাবতলার বাসিন্দা নাজির ওরফে নজির ছেলে রাব্বি (১৯) ও ফারুকের ছেলে সিয়াম (১৯) পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব শক্রতার জের ধরে জুবায়ের বিন মোহাম্মদকে একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভোলাব গাবতলা নামকস্থানে শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণপাড়ে নিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। পরে তার লাশ গোপন করার জন্য শীতলক্ষ্যা নদীর মধ্যে ফেলে দিয়ে জুবায়েরের বাড়িতে আসামরীরা মিথ্যা সংবাদ দেয়। এই হত্যার রহস্য লুকানোর জন্য আসামী চারিতালুকের বাসিন্দা হাছেন আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (৩৫)সহ আসামীদের অজ্ঞাতনামা আত্মীয়-স্বজনরা হত্যার রহস্য গোপন করে এলাকায় মিথ্যা প্রচার যে, জুবায়ের বিন মোহাম্মদ নদী পারাপারের সময় নদীতে পড়ে পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ডাঃ নাজমুল হোসেন মতামত দেন বুকে ও মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধের কারণে জুবায়েরের মৃত্যু হয়। বাদীনি অভিযোগ করেন, তার ছেলে জুবায়েরের লাশের ময়নাতদন্ত করার সময় উল্লেখিত আসামীরা সকলেই বাধা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেছে। এ মামলার বাদিনী মিরানা বেগম এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় নিহত জুবায়েরের মা মিনারা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইছাপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (উপ-পরিদর্শক) পরিতোষ সরকার বলেন, লাশ উদ্ধারের পর একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করায় শুক্রবার রাতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।