
নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর আগারগাঁও থানাধীন শ্যামলীর সিকেডি হাসপাতালে চিকিৎসার নামে চলছে নজিরবিহীন অনিয়ম, দুর্নীতি এবং রোগী হয়রানি। অভিযোগ উঠেছে, এই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ তানভীর আহম্মেদের অধীনে চিকিৎসাধীন রোগীরা একদিকে যেমন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
এসআই নিঃ শেখ রফিকুল ইসলাম, যিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনে কর্মরত, অভিযোগ করে জানান—তার স্ত্রী মোছাঃ সাহানারা বেগম দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগে বর্তমানে কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে সিকেডি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ক্যানোলা স্থাপন বাবদ ৩৫,০০০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তা নষ্ট হয়ে পড়ে এবং পুনরায় রিপেয়ারিং করতে ২,০০০ টাকা নেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়—প্রতিবার ডায়ালাইসিস বাবদ ৩,২০০ টাকা দিতে হয়, অথচ এরপরও রোগীর স্বজনদেরকে আলাদাভাবে ওষুধ কিনতে হয়।
রোগীর স্বামী আরও অভিযোগ করেন, একজন চিকিৎসক যেখানে সর্বোচ্চ ২৫ জন রোগী দেখার নিয়ম রয়েছে, সেখানে ডাঃ তানভীর আহম্মেদ প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী দেখেন এবং রাত ১৪.০০ ঘটিকার পর অপারেশন পরিচালনা করেন। চিকিৎসা শুরুর নির্ধারিত সময় থাকার পরও একাধিকবার সময় পরিবর্তন করা হয়, যা রোগী ও স্বজনদের জন্য চরম হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
চাঞ্চল্যকর আরও একটি অভিযোগ হল,ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে হলে নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকা হলেও সিরিয়াল ম্যানেজার মোঃ আজাদ অতিরিক্ত ১০০/২০০ টাকা আদায় করেন, যা প্রকাশ্য ঘুষ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এসআই রফিকুল ইসলাম প্রশ্ন রাখেন—প্রতিদিন এত মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার থাকতে পারে?
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সিকেডি হাসপাতাল দাবি করে তারা ১৮০০ কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছে। অথচ চিকিৎসা শেষে রোগীরা বাসায় ফিরেই শুরু করেন বমি, ঠাণ্ডা লাগা, ব্যথা আর অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে নতুন যুদ্ধ।” এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারিত সাফল্যের গল্পের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতা—যেখানে মানুষ চিকিৎসার নামে লুণ্ঠিত হচ্ছে, রোগীর জীবন নিয়ে চলছে নিষ্ঠুর বাণিজ্য। প্রশ্ন রয়ে যায়—কোথায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নজরদারি? কোথায় দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎপরতা? এমন অনিয়ম কি চলতেই থাকবে? সাধারণ জনগণ এবং ভুক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।