লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ভূলুয়া নদী খননের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে "চরকাদিরা ইউনিয়নের আপামর জনতার" ব্যানারে একটি সামাজিক সংগঠন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট বাজারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট আলেম মুফতী শরীফুল ইসলাম, চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুফতী নুরুল্লাহ, রেদোয়ান হোসেন সহ স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী হচ্ছে ভুলুয়া। একসময়ে নদীটির দৈর্ঘ্য ৭১ কিলোমিটার ও প্রস্থ ছিল ৮৫ মিটার । বর্তমানে সেই নদী এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে। দখলে দূষনে নদীটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে এ নদী। বড় বড় সাম্পান নৌকা, জাহাজ চলাচল করতো এ নদীতে। বহু জাতের প্রাকৃতিক মাছের সমাহার ছিল এখানে। সে ইতিহাস এখন গল্পের মত হয়ে গেছে। এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ নদীটি স্থানীয়রা দখল করে এখন মরা খালে পরিনত করেছে।
গত বছর বর্ষায় পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর, সদর ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ এক মাসেরও বেশী সময় পানিবন্ধি হয়ে পড়েন। চলতি বর্ষার মৌসুমকে সামনে রেখে আবারও আতঙ্কে দিন অতিবাহিত করছেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ।
বর্তমানে নদীটির বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রভাবশালীরা দখল করে নদীর দুপাশে গড়ে তুলেছেন অসংখ্য মাছের প্রজেক্ট। আবার মাঝখানে বাঁধ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করে আসছে কেউ কেউ। নদীর তীর ঘেষে ঘরবাড়ি উঠিয়ে দখল করে রাখা হয়। বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ফেলে দূষণ করছে নদীর পানি। এতে করে নদীটি ভরাট ও পলি জমে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুকিয়ে গেছে। এখন প্রায় মৃত হয়ে পড়েছে এ নদীটি। আগে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো এ নদীতে। এখন আর সে সব মাছ পাওয়া যাচ্ছেনা। এতে নদীকেন্দ্রিক জীব বৈচিত্র্য চরম হুমকিতে পড়েছে বলে জানান বক্তারা। বক্তারা দ্রুত ভূলুয়া নদীকে প্রভাবশালীদের কবল থেকে মুক্ত করে খননের জোর দাবি জানান। নচেৎ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও সহ বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।