
শরীয়তপুর থেকে ফিরে বিশেষ প্রতিনিধি ।। ফেসবুকে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেমের সম্পর্ক, এবং পরিশেষে ভয়ংকর ব্ল্যাকমেইলিং— এমন এক চক্রের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুর জেলায়। অভিযোগ অনুযায়ী, “লিয়া আক্তার” নামে এক নারীকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে, যারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় ও মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে নিরীহ তরুণদের হয়রানি করছে। ফেসবুকের প্রেম থেকে শুরু ব্ল্যাকমেইলিং ভুক্তভোগী বাইজিদ ঢালী, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার উত্তর হাটুরিয়া গ্রামের মকবুল ঢালীর ছেলে এবং সরকারি শামসুর রহমান কলেজের মেধাবী ছাত্র। তিনি জানান— কয়েক মাস আগে ফেসবুকে ‘আরিফশা’ নামে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রথমে সাধারণ বন্ধুত্ব, পরে ঘনিষ্ঠতা, এবং অবশেষে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। ওই তরুণী নিজেকে অবিবাহিত বলে পরিচয় দিলেও পরে জানা যায়, তার প্রকৃত নাম লিয়া আক্তার, এবং তিনি বিবাহিত ও এক সন্তানের জননী। বাইজিদের দাবি, “লিয়া আক্তার ওরফে আরিফশা আমার সঙ্গে কখনো দেখা করার আগেই প্রেমের অভিনয় করত। পরে জানতে পারি, সে একাধিক পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে এবং কিছু অসাধু সাংবাদিক ও আইনজীবীর সঙ্গে মিলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়।” চক্রের কৌশল: প্রেম, আলামত, মামলা স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই চক্রটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করে, এরপর প্রেমের প্রমাণস্বরূপ কিছু আলামত (ছবি, চ্যাট, কলরেকর্ড) সংগ্রহ করে রাখে। পরে সম্পর্ক ভেঙে গেলে বা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা না পেলে, ওই নারী ধর্ষণ বা পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করে হয়রানি করে। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকাস্থ ও শরীয়তপুরের কয়েকজন সাংবাদিক ও আইনজীবী এই চক্রের পেছনে থেকে এসব মামলা সাজাতে সহায়তা করে থাকে। ভুক্তভোগীর বক্তব্য বাইজিদ ঢালী জানান, “লিয়া আক্তার আমাকে একদিন বাসায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে চিৎকার দেয়। স্থানীয়রা এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরে তার পক্ষের কিছু ব্যক্তি মীমাংসার নামে আমার পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় তারা আমার নামে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলা করে।” তিনি আরও বলেন, “এটি আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সম্মানহানির ষড়যন্ত্র। আমি আদালতে ন্যায়বিচার চাই।” চিকিৎসা প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য গোসাইরহাট থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলার পর পুলিশ লিয়া আক্তারকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। মেডিকেল রিপোর্টে একাধিক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের আলামত পাওয়া যায় বলে জানা গেছে। আইন বিশেষজ্ঞের মতামত আইনজীবী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “যদি কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ এনে অন্যকে ফাঁসায়, তবে সেটি ‘মানহানি’, ‘অপব্যবহার’ ও ‘প্রতারণা’ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভুক্তভোগী চাইলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় পাল্টা মামলা করতে পারেন।” অভিযোগ তদন্তের দাবি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “যদি সত্যি কোনো প্রতারণা চক্র সক্রিয় থাকে, তবে তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।” ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আজ প্রেম ও সম্পর্কের সহজ মাধ্যম হলেও, এই সুযোগকে পুঁজি করে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত এই ধরনের প্রতারণা ও হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো তরুণ নিরীহভাবে এ ধরনের ফাঁদে না পড়ে। উল্লেখ্য মোসা রিয়া আক্তার বাদী হয়ে ঘটনার প্রায় এক মাস পর শরীয়তপুর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে গত ০৫/০৫/২০২৫টা আরিখ বিকাল অনুমান ৪.০০ যার সময় স্থানীয় গোসাইরহাট থানায় মামলা করিতে গেলে খান্য কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়এবং বিজ ট্রাইব্যুনালে মামলা করার পরামর্শ দেন । পর্যবেক্ষণে জানা গেছে মামলাটি পর্নোগ্রাফি ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো ছবিতে পর্নোগ্রাফির এমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি। আমাদের হাতে অনেকগুলো ছবি এসে পৌঁছেছে তারই উপলক্ষে উপস্থাপন করা হলো।
ক্যাপশন: ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি মেয়ে একটি ছেলের বুকের উপর পা উঠে শুয়ে রয়েছে। এইটা কোন ধরনের পর্নোগ্রাফি হয়। আর এই ছেলে বা এই মেয়ে এটা এভাবে প্রমাণ কিভাবে হয়। এইভাবে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করে সুন্দর জীবন গুলো ধ্বংস করার প্রক্রিয়ায় লিপ্ত রয়েছে একশ্রেণীর ব্ল্যাকমেলিং গোষ্ঠী।