
আলম খান :গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর সাহসী সংবাদকর্মী মো: আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে—এই নির্মম ঘটনায় শোক ও ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাংবাদিক সমাজ। সংবাদপত্রের কলম যখন সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়, তখন তা শত্রুর চোখে কাঁটার মতো বিঁধে যায়। সেই কলমকে স্তব্ধ করে দেওয়ার এই জঘন্য অপচেষ্টা শুধু একজন মানুষের নয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপরও এক ভয়াবহ আঘাত। রবিবার (১০ আগষ্ট ) দুপুরে শিবপুর প্রেস ক্লাব আয়োজনে , প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন—শিবপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের, প্রধান শিক্ষক, নুরুদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, সাবেক প্রধান শিক্ষক মহব্বত খান, উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোক্তার হোসেন, কবি ও লেখক নুরুদ্দিন দর্জি, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, শিবপুর প্রেসক্লাবের সাবেক আহবায়ক ও জাকের পার্টি যুব ফ্রন্ট নরসিংদী জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক আলম খান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মানিক, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব খান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোমেন খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ হাসান ও হাফেজ মাওলানা আরিফুল ইসলামসহ অনেকে। সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে তুহিন হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং সাংবাদিকদের পেশাগত ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন— “সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাদের কলমের আঘাতে যেমন দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশ পায়, তেমনি অপরাধীরা ভয় পায়। তাই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা শুধু তাদের নিজের জন্য নয়, বরং একটি মুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের জন্য অপরিহার্য।” তারা আরও জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাংবাদিকদের উপর হামলা, হুমকি ও হত্যার ঘটনা বেড়ে চলেছে, অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিচার অধরা রয়ে গেছে। এই সংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। মানববন্ধনে নিহত আসাদুজ্জামান তুহিনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। একই সঙ্গে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা আরো বলেন— “কলম থেমে গেলে, আলো নিভে গেলে, অন্ধকার শুধু সাংবাদিকতার আঙিনায় নয়, গোটা জাতির বুকে নেমে আসবে। তাই আমরা চাই, আর কোনো সাংবাদিক তুহিন ভাইয়ের মত যেন হারিয়ে না যায়; আর কোনো সত্যের সৈনিক যেন রক্তে ভিজে না পড়ে।” মানববন্ধনের সারি যতদূর চোখ যায়, ততদূর পর্যন্ত যেন প্রতিবাদের তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের চোখে ছিল শোক, কণ্ঠে ছিল ক্ষোভ, আর হাতে ছিল ন্যায়বিচারের দাবির ব্যানার।