বুধবার, ১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, বিকাল ৫:৩২

মেঘনায় ভারসাম্যহীন বাক প্রতিবন্ধীকে হত্যার অভিযোগ; ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা স্থানীয় প্রভাবশালীদের

0Shares

আলমগীর হোসেন: কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মৃত আলমচানের বাকপ্রতিবন্ধী ছোট ছেলে কবির। ভারসাম্যহীন অবস্থায় প্রায় সে উলঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। গত ২৬ জুন সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের কয়েকজন নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে। পরে প্রতিবন্ধী ছেলেটি দিবাগত ভোর রাতে মারা যায়। মৃত কবিরের মা ছমিরন জানায় আমার ছেলেটি কথা বলতে পারে না কিন্তু সে সারারাত ছটফট করে ভোর রাতে মারা যায়। সরেজমিনে জানা যায় ঘটনার দিন রতনপুর কবরস্থানের পাশে উলঙ্গ অবস্থায় বসে ছিল প্রতিবন্ধী কবির। সেই রাস্তা দিয়ে একই গ্রামের প্রভাবশালীদের একজন স্বপরিবারে যাওয়ার সময় উলঙ্গ প্রতিবন্ধী কবিরকে দেখে। এতে সে বিব্রত অবস্থায় পরে। তাই সে সন্ধ্যার পর সে এবং আরো বয়েকজন মিলে প্রতিবন্ধী কবিরকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং সেই স্থানেই কবির ছটফট করতে থাকে। পরে তার ভাই বাহারউদ্দিন তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। ভোর রাতে সে মারা যায়। এদিকে প্রতিবন্ধী ছেলেটি মারা যাওয়ার পর প্রায় ২ সাপ্তাহ অতিবাহিত হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খোলেনি ছেলের মা, ভাই, আত্মীয়স্বজন এমনি এলাকাবাসীর কেউই। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকগণ এই রহস্য উৎঘাটন করে। বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) জানান, ভুক্তভোগী প্রভাবশালীদের ভয়ে অভিযোগ না জানালে, বিষয়টি অবগতি হয়ে সরকার স্বপ্রনোদিত হয়ে মামলা করতে পারে।। ছমিরন বয়স প্রায় ৫০। বছর সাতেক আগে স্বামী আলম চাঁনকে হারিয়েছেন তিনি। তারপর থেকে তিন ছেলেকে নিয়ে অথৈই সাগরে পরে যান তিনি। স্বামীর ভিটা বলতে কিছুই নেই। এলাকার এক মুক্তিযোদ্ধার পরিত্যক্ত বাড়িতে কোনরকম চেয়ে পান্তে সংসার চলে। এক ছেলে অনেক আগেই কাজের খোজে নিরুদ্দেশ। ২য় ছেলে করে দিন মুজুরের কাজ। আর ছোট ছেলেটি বোবা ও ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী। এলাকার লোকজন তাকে পাগল বলে। একজন নাগরিকের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। অথচ এই নিঃস্ব পরিবারটি ৫টি মৌলিক চাহিদার সবগুলো থেকেই বঞ্চিত। ছমিরনের স্বামীর নিকটাত্মীয়গণ অনেক ধনী ও প্রভাবশালী হলেও ছমিনের শেষ আশ্রয় হয়েছে অন্য পাড়ার এক মুক্তিযুদ্ধার পরিত্যাক্ত বাড়িতে। যেখানে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা , নেই সেনিটেশনের ব্যবস্থা , নেই বিদ্যুৎ। রতনপুর গ্রামে সরকার কতৃক দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তার ভাগ্যে জুটে নাই। সেই ঘরও পেয়েছে রতনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আকিল ও বিএনপির ওয়ার্ডের সেক্রেটারি মুকবুলের ছোট ভাই আবু তাহের। এই আবু তাহের ও তার ছেলে দুজনেই সৌদি প্রবাসী। একই ঘরে দুই জন প্রবাসী থাকা অবস্থায় কিভাবে সরকারি ঘর পায়? আর ছমিররা ঘর পায়না। এলাকাবাসীর দাবি এই ভারসাম্যহীন প্রতিান্ধীর মৃত্যুর আসল কারন বের করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা।

0Shares

শেয়ার করুন