
কমলনগরে পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং বন্ধ,আগামী বর্ষার আগে ভুলুয়া নদী খনন ও উপজেলার সকল খাল দখলমুক্ত করা এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, ভিডব্লিউবি চাউলের কার্ড লটারির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কমলনগর উপজেলা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স গেইটের সামনে লক্ষ্মীপুর – রামগতি আঞ্চলিক সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত কয়েকশ’ নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি গ্রহণের বিষয়টিনিশ্চিত করে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত উজ-জামান বলেন, স্মারকলিপিতে বিষয়গুলো নিয়মিত আলোচনার অংশ আয়োজকরা নতুন করে আবার বিষয়গুলো লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যাগুলো নিরসনের চেষ্টা চলছে ।
এসময় উপজেলা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও জেএসডির উপজেলা সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল মোতালেব বলেন, দীর্ঘ ষোল বছর জনগণের কাধে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে থাকা স্বৈরাচার পাঁচই আগস্ট এ পতন হওয়ার পর ভেবেছিলাম একটা পরিবর্তন আসবে কিন্তু দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন আমরা লক্ষ্য করি নাই, আন্দোলনের পরবর্তীতে এক দুই মাস অলরেডি থমকে গিয়েছিল প্রশাসন। প্রশাসনের চোর ডাকাত তারা এক দুই মাস থমকে ছিল, পরবর্তীতে ঘুষ দুর্নীতি আগের মতই চলছে, সরকারি যে সমস্ত সাহায্য সেবা মানুষরা পায় তাতে ঘুস দূর্ণীতি যেন বন্ধ হয় এবং অব্যবস্থাপনা নিরসন হয় তার জন্য কাজ করতেই “নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি গঠিত হয়েছে । তিনি আরও বলেন, যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া এবং জনগণের হয়রানি বন্ধ না হয়, জনগণের উপর নির্যাতন বন্ধ না হয়, অফিস আদালতে ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ না হয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না হয় তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। ৩৬ জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা চেতনা যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়িত না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান তিনি।
নাগরিক বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মুফতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ভিডব্লিউবি সাবেক ভিজিডির কার্ড বিনামূল্যে দিচ্ছে সরকার । অথচ যে সমস্ত ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানরা পলাতক ওই সকল ইউনিয়নের প্রশাসক এবং মেম্বাররা আতাত করে এক একটি নাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে। যে কারণে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃতদের মাঝে লটারির মাধ্যমে এই ভিজিডি কার্ডের নাম বন্টণ করতে হবে। এছাড়া মেম্বাররা ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। যে কারণে প্রতিটি ভোটার আইডি কার্ড এর বিপরীতে একটি করে টোকেন নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গরিবের চালে কেউ যদি কারচুপি করে সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এছাড়া আগামী বর্ষার আগেই ভুলুয়া নদী খনন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও লোডশেডিং এর রোস্টার তৈরি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে কতৃপক্ষকে হুশিয়ারি দেন এ বক্তা।
এসময় অন্যন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন,
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কমলনগর উপজেলা সভাপতি মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমলনগর উপজেলা সমন্বয়ক মো. আলী আক্কাস, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কমলনগর উপজেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমান মাহমুদী,গণঅধিকার পরিষদ লক্ষ্মীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক সার্জেন্ট সোলাইমান চৌধুরী প্রমুখ।
উল্লেখ্য: উপজেলাবাসীর নাগরিক অধিকার রক্ষা, নিরাপদ সেবা ও সরকারি সকল সেক্টরের ঘুস দূর্ণীতি বন্ধ করতে পাঁচটি রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে উপজেলা “নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। যথাক্রমে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল জেএসডির সমন্বয়ে এ নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়।