
লক্ষ্মীপুর -৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহশিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেছেন, পলাতক ফ্যাসিস্টরা এক সিমেন্টের বস্তায় ইলিয়াস আলীকে যেমন গুম করেছে, তেমনি সিলেটের আরেক জামায়াতের রোকনকেও গুম করেছে। সেটা জামায়াতও ভুলে গেছে, বিএনপিও ভুলে গেছে।
বিগত ১৭ বছর রাজপথে থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের দ্বারা জেল জুলুম নির্যাতন গুম খুনের শিকার হয়েছে বিএনপি জামায়াতের অগণিত নেতাকর্মীরা। নিপীড়ন আর জুলুম সহ্য করতে গিয়ে জামায়াত আর বিএনপির রক্ত একাকার হয়ে গেছে।এসব এখন ভুলে গেছে জামায়াত, ভুলে গেছে বিএনপি।
রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে ইফতার আয়োজনের সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে রবিবার সন্ধ্যায় কমলনগর উপজেলার মুন্সীরহাট বাজারে চরমার্টিন ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফ উদ্দিন নিজান এসব কথা বলেন।
এর আগে শনিবার রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা কোনো বিরোধ করবেন না। বিরোধ করলে হাসিনা চলে আসবে, বাংলাদেশ থাকবে না। আমরা একটা বাংলাদেশ পাইছি আবার।
’৭১-এ আমরা জয়লাভ করেও জয়লাভ করতে পারিনি।৭৫-এ শেখ মুজিবের পতনের পরেও আমরা পারি নাই। ‘৯০-তে জয়লাভ করেও পারি নাই। এই ২৪-এ এসেও যদি না পারি, জীবনেও আমরা আর পারব না। ৫ আগস্টের পরে ওসি সাব, ইউএনও সাব ও তহশিলদার সাবরা ঘুষ খায়নি? যদি খায়, তাহলে আবার কিসের ভোট?।
নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, ‘আপনারা তুচ্ছ করে বলেন, ছাত্রদের দল, বিএনপি তুচ্ছ করে বলে জামায়াতের দল, জামায়াত তুচ্ছ করে বলে বিএনপির দল। এভাবে তুচ্ছ করে বললে হাসিনা চলে আসবে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনারা ঘুষ খাবেন, ইউএনও সাব ঘুষ খাবেন, তহশিলদার সাব ঘুষ খাবেন, পুলিশ খুষ খাবে। তাহলে মানুষ কি বসে থাকবে নাকি? মানুষ তো প্রতিবাদ করবেই। প্রতিবাদ করতে হলে তো বিরোধী দল লাগবে। বিরোধী দল হয় জামায়াত হবে, না হয় অন্যরা হবে।
কিন্তু আপনারা (বিএনপি) কি হাসিনার মতো ভাই ভাই খেলতে চান? আমি আর তুমি, আমি আর জাতীয় পার্টি। অতএব, এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- আপনি এমপি হলে কী করবেন? ঘুষ কিভাবে বন্ধ করবেন? আমি পাস করলে আমাকে আপনি সাহায্য করবেন, অন্যায় করলে বিরোধিতা করবেন- এটাই তো নিয়ম। এটাই তো গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রের জন্যই তো ২৪-এ আমাদের কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষ জীবন দিয়েছে।
নির্বাচনে যে-ই জয়লাভ করবে, তাকেই আমি ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেব। কিন্তু কোনো বিরোধ করবেন না। বিরোধ করলে এই বাংলাদেশ আর থাকবে না। হাসিনা আবার চলে আসবে।
পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে কমলনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম কাদের, সদস্য সচিব নুরুল হুদা চৌধুরী, রামগতি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডা জামাল উদ্দিন, সদস্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।