
নরসিংদী সংবাদদাতা : নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুনর্বাসিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ খোদ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, নরসিংদী শহরের পশ্চিম ব্রাহ্মন্দী এলাকায় স্বপ্ননীড় প্রোপ্রাটিজ লিমিটেডের অধীনে নির্মাণাধীন বহুতল ভবন অথৈ টাওয়ারের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এই ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন এবং উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন নরসিংদী জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া। অথৈ টাওয়ার নামে বহুতল এই ভবনটি যে জায়গার উপর নির্মাণ করা হচ্ছে সেটির মালিক নরসিংদী শহরের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক লিটন(হাতকাটা লিটন)। তিনি স্বপ্ননীড় প্রোপ্রাটিজ লিমিটেড নামে বিল্ডার্সের সাথে ভবনের কয়েক ফ্ল্যাট তাদের দেওয়া হবে এই শর্তে ওই বিল্ডার্সে সাথে ভবন নির্মাণে চুক্তি বদ্ধ হন। অর্থাৎ যেই ভবনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন সেটা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ওই নেতার বাড়ীই বলা চলে। সারাদেশে যখন আওয়ামী নেতাকর্মীদের তাড়িয়ে বেড়ানো হচ্ছে। ঠিক সেই সময় নরসিংদীতে বিএনপির গুটি কয়েক নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয় ও ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুনর্বাসিত হচ্ছেন। এমনটাই মনে করছেন ব্রাহ্মন্দী এলাকার সাধারন মানুষ। তবে ক্যামেরার সামনে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণ-আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। সেই দৌড়ে নরসিংদীর নেতাকর্মীরাও নেহাত কম ছিলো না। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসায় তাদের কেউ কেউ এখন নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এলাকায় ফেরার জন্য তাদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হচ্ছে। যারা টাকা দিচ্ছেন না, তাদেরকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের কেউই নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি, এমনকি এলাকার নামও উল্লেখ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এলাকায় ফিরতে কাকে কত টাকা দিতে হয়েছে এবং ফেরার পর কী অবস্থায় দিন পার করছেন, সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশ না করে তৃণমূলের এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ঘর থেকে বের হতে পারছি না। সারাদিন ঘরেই থাকতে হচ্ছে। হামলার হাত থেকে বাঁচতে ‘বিএনপিসহ এলাকার প্রভাবশালীদেরকে’ টাকা দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাড়িঘরে ফেরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতারা অবশ্য অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এলাকায় ফিরতে শুরু করলেও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বেশিরভাগ নেতা এখনও ‘আত্মগোপন’ রয়েছেন। বিষেশ করে সাবেক মেয়র জেলা৷আওয়ামালীগের যুগ্ন সম্পাদক কামরুলের নেতা কর্মীদেরকে পুর্নবাসিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে অনেকে দেশ ছেড়েছেন, আবার কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করার সাথে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপির স্থানীয় অনেক নেতা। এব্যাপারে বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনের সাথে যোগাযোগে চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়। তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।