বৃহস্পতিবার, ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রাত ১০:৫৫

মাকে বেঁধে রেখে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির বিবৃতি

আরও পড়ুন

26Shares

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ফিল্মি স্টাইলে মাকে বেঁধে রেখে এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার বিভিন্ন পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের বটতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 এদিকে সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর দেশব্যাপী ব্যপক সাড়া পড়ে।  এরই ধারাবাহিকতায় দুষিদের বিচার দাবি করে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি একটি বিবৃতি দেন। বুধবার রাতে এসংক্রান্ত একটি বিবৃতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন সংগঠনটি।

 বিবৃতিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো…

কমলনগরে মাকে বেঁধে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই!

“সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট দিলরুবা নূরী আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে অবিলম্বে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাকে বেঁধে রেখে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত ৯ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে মাকে বেঁধে রেখে একজন তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তরুণীর পরিবার নদী ভাঙনে ঘর বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব, ফেনী শহরে রিকশা চালিয়ে তার বাবা সংসার চালানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বর্তমানে চরকাদিরা নামক এলাকায় ছোট একটি বসতভিটায় মা এবং দুই ভাইসহ বাস করছে কোনরকমে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে সম্পর্কিত রনি নামের প্রতিবেশী তরুণ ৫/৬ জনকে নিয়ে রাতে ঘরের দরজা ভেঙে মা এর হাত মুখ বেঁধে পাশের ঘরে তরুণীকে ২জন মিলে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাদের (মা-মেয়ে) সঙ্গে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। পরের দিন বাবা বাড়ি ফিরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে ঘটনার বিচার চাইলে উল্টো রনির কাছ থেকে হুমকির মুখে পড়েন। বিচার প্রক্রিয়ার কোন উদ্যোগ না পেয়ে স্থানীয় সেনাবাহিনী অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগীর বাবা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিচারের কোন উদ্যোগ গৃহীত হয়নি। পাশাপাশি পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিন অতিবাহিত করছে। নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, ‘নারী নির্যাতন-ধর্ষণ খুবই সহজ এবং স্বাভাবিক বিষয় এ পরিণত হয়েছে সর্বত্র। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে এর প্রভাব আরো ভয়াবহ। এদের নিপীড়ন করাও যেমন সহজ তেমনি বিচারের আওতায় আসার সম্ভাবনাও থাকে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা টাকা ও ক্ষমতার কাছে জিম্মি। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতাও রয়েছে। ফলে ভূক্তভোগী গরীব মানুষরা হয়ে পরেন অসহায়। দরিদ্র পরিবার খরচ করতে পারবে না বলে মামলা করতে পারে না, আবার স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিচারও পায় না। টাকা পয়সা বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিষয় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এই ভূক্তভোগী তরুণী ও তার পরিবারের সাথে এই ঘটনাই ঘটেছে। তরুণীর বাবা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরছেন বিচারের আশায়। রনিসহ বাকিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং ঐ পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।’ নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে প্রশাসনকে কার্যকর উদ্যোগ গহণের আহ্বান জানান এবং ধর্ষকদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান। বার্তা প্রেরক রুখশানা আফরোজ আশা দপ্তর সম্পাদক সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি “

এদিকে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দীয় মিটির দপ্তর সম্পাদক রুখসানা আফরোজ আশা জানান, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি তারা অবগত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে প্রশাসনকে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ভুক্তভোগীর পক্ষে মামলা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন। এবং দোষীদের দ্রুত  গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে এ বিবৃতি দিয়েছেন তারা। পরবর্তীকালে অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হলে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগীর পক্ষে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি দোষীদের ধরতে প্রশাসন মাঠে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য : চলতি মাসের  ৯ (ডিসেম্বর) গভীর রাতে পাঁচ যুবক হাঠৎ করে তরুণীর বসতঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে প্রথমে তার মাকে হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তাদের মধ্যে থেকে একজন তরুণীর কক্ষে গিয়ে মুখ বেঁধে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাদের (মা-মেয়ে) সঙ্গে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এসময় নির্যাতনের শিকার তরুণীটির মা মো. রনি নামে প্রতিবেশী এক যুবককে চিনতে পেরে চিৎকারের চেষ্টা করলে তারা তার মুখে কাপড় গুঁজে দেন। পরে তিনজন তার হাত বেঁধে রাখেন এবং দুইজন মেয়ের কক্ষে যান। একপর্যায়ে তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। এসময় মেয়েকে রক্ষায় তিনি বারবার আকুতি করলেও তাদের মন গলেনি বলে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ।

26Shares

শেয়ার করুন

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরো