মঙ্গলবার, ১২ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সন্ধ্যা ৬:১০

ফরিদপুর তিতুমীর মার্কেটে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের দোকান বরাদ্দেন ৪০ কোটি টাকা দুনীতি ও অনিয়মে ১৬৭ জন ব্যবসায়ী দিশেহারা।

0Shares

এম.এ. মুঈদ হোসেন (আরিফ): ফরিদপুর শহরের সরকারী তিতুমীর মার্কেটে (পূর্বাংশ) প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করে নিয়ম বহিভুত ভাবে দুনীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ৩৩৪ টি দোকান বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকৃত দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের উপেক্ষা করে প্রভাশালী রাজনৈতিক নেতা ও কিছু দুনীতিগ্রস্থ পুলিশ, প্রশাসনসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নামে বেনামে দোকান বরাদ্দ নিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রকৃত ব্যবসায়ীদের এসব দোকান বরাদ্দ পাওয়ার কথা ছিল। এছাড়া একই পরিবারের নামে একাধিক দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে না মর্মে জেলা প্রশাসক এক বরাদ্দ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছিল। অথচ দোকান বরাদ্দ পাওয়ার তালিকায় অন্তত ২৯টি পরিবারের ৬৮ জনকে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার তথ্য মিলেছে। একই পরিবারের সদস্যদের নামে সর্বাধিক ৬টি পর্যন্ত দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় আরো আছেন প্রভাবশালী স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য দলেরর নেতাদের স্বজনদের নাম। জানা গেছে সম্প্রতি মার্কেটে পূর্ণগঠন ও আধুনিকায়নের নামে বিনা নোটিশে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহীনির ন্যায় পুরাতন ১৬৭টি দোকানদার ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের মিশনে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিল। এমনকি ১৬৭ জন ব্যবসায়ী দোকানদারদের নামে মামলা, হামলা ও হুমকি দিয়ে ভয়ের ত্রাস সৃষ্টি করে তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরবর্তীতে ১৬৭টি ব্যবসায়ী দোকানদার পরিবার পরিজন নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করে। ভুমি মন্ত্রনালয় ও জেলা প্রশাসকের চিঠির আলোকে তাদের আশ্বস্থ করা হয়েছিল ১৬৭ জন দোকানদার (পুরাতন) ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২য় ও ৩য় তলার দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। বড় অংকের ঘুষ অনিয়মের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অযোগ্য ও নতুন লোকদের নামে দোকান বরাদ্ধপত্র ইস্যু করা হয়েছে। জানা যায় কিছু সরকারী ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট দোকান বরাদ্দ বানিজ্যে লিপ্ত ছিল। এই সিন্ডিকেট দোকান বরাদ্দ নামে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। জানা গেছে ২০০০ সালে অগ্নিকার্ন্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ১৬৭ জন ব্যবসায়ীর লিজ নেওয়া ১.২২ শতাংশ জমিতে ৩ তলা বিশিষ্ট মার্কেট নির্মানে আনুমানিক মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫,৯০,৩১,৩৯৮/- (পাঁচ কোটি নব্বই লক্ষ একত্রিশ হাজার তিনশত আটানব্বই) টাকা অর্থের উৎস বেসরকারী অর্থায়নে (ব্যবসায়ীদের নিজস্ব অর্থে) এমন শর্তে প্রকল্প পাশ করে ভুমি মন্ত্রনালয়। কিন্তু প্রকল্প পাশ হওয়ায় একের পর এক নতুন শর্ত জারী করে স্থানীয় প্রশাসন। ভুমি মন্ত্রনালয় বিগত ১৫ই জানুয়ারী ২০১৩ তারিখে ক্ষতিগ্রস্থ ১৬৭ জন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় তলা বরাদ্দ দেওয়ার শর্তে মুচলেকা/অঙ্গীকারনামা সংযুক্তি করে অনুমোদন দেয়। ভুমি মন্ত্রনালয়ের আদেশ উপেক্ষা করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের শুধু নিচ তলায় ছোট ছোট কবুতরের ঘরের মত ১৬৭ টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রাকৃতিক আলো বাতাস ও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পর্যন্ত পাওয়া যায় না। ঐ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতারা ২য় ও ৩য় তলায় ৩৩৪ টি দোকান ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। তৎকালীন মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্ল্যান বহির্ভুত মার্কেট নির্মানের বিষয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা ছিল। ফ্যাসিষ্ট সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নেতারা হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করে। দুর্নীতি দমন কমিশনে দোকান বরাদ্দের অনিয়মের বিগত ০৭ আগস্ট, ২০১৬ সালে একটি অভিযোগ দায়ের করিলে উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুল হক অনুসন্ধানী কর্মকর্তা ০৯ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে একটি চিঠি ইস্যু করেন। কিন্তু প্রভাবশালী মহল এটাকে তদন্তকে আড়াল করে তাদের কাজ চালিয়ে যায়। বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট ১৬৭ জন ব্যবসায়ি এর প্রতিকার চেয়েছেন। (বিস্তারিত আসছে আগামী পর্বে)।

 

0Shares

শেয়ার করুন